ফায়ার লাইসেন্স:
ফায়ার লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন:
নির্ধারিত আবেদন ফরম পূরন করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর ওয়ানস্টপ সার্ভিসে সেন্টারে প্রেরন করতে হয়। ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার হতে আবেদন ফরম ও ডকুমেন্টস সংশ্লিষ্ট এলাকার ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর এর নিকট প্রেরন করা হয়। সংশ্লিষ্ট এলাকার ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র যাচাই পূর্বক সরেজমিনে আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের ফায়ার সেফটি, ইভাকুয়েশন প্লান ইত্যাদি পরিদর্শনের করেন।
ফায়ার ফাইটিং সরঞ্জামাদি স্থাপন, ফায়ার সেফটি ও ইভাকুয়েশন প্ল্যান ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। নির্দেশনা মোতাবেক সমস্ত শর্তাবলী পূরনের পর বিধি মোতাবেক ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর এসেসমেন্ট সম্পন্ন করে নির্ধারিত লাইসেন্স ফি নির্ধারিত কোডে ব্যাংক চালানের মাধ্যমে প্রদান করার অনুমতির জন্য ডিমান্ড নোট ইস্যুর জন্য সংশ্লিষ্ট ডিএডি/এডি/ডিডি বরাবর সুপারিশ করেন। ডিমান্ড নোট পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত লাইসেন্স ফি ০৩ কার্য দিবসের মধ্যে ব্যাংক চালানের মাধ্যমে জমা প্রদান পূর্বক চালানের মূল কপি সংশ্লিষ্ট এলাকার ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর এর নিকট প্রেরন করতে হয়।
ডিমান্ড নোটের শর্তাবলী সঠিক ভাবে পূরন করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করার জন্য ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর প্রতিষ্ঠানটি পুনরায় পরিদর্শন করে এবং সমস্ত নির্দেশনাবলী সঠিক পূরন হয়ে থাকলে লাইসেন্স ইস্যুর পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়। ডিমান্ড নোটে উল্লেখিত শতাবলী পূরন করলে ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর লাইসেন্স ফরম পূরন করে উপসহকারী পরিচালক/সহকারী পরিচালক/উপ পরিচালক কর্তৃক লাএসেন্স ইস্যুর কাজ সম্পন্ন করে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে লাইসেন্সটি গ্রাহককের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
যদি ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে লাইসেন্সের শর্তাবলী সঠিক ভাবে বিদ্যমান না পান তবে পুনরায় চিঠি ইস্যু করে শর্তাবলী পূরনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন এবং সঠিক ভাবে নিদেশনা মোতাবেক শর্তাবলী পুরন করলে প্রতিষ্ঠানটিকে ফায়ার লাইসন্সে প্রদান করা হয়।
লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতি:
নির্ধারিত লাইসেন্স নবায়ন ফি চালানের মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর চালান ও লাইসেন্স এর মূল কপি ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারে জমা দিয়ে ডিউটি অফিসারের নিকট হতে জমা রশিদ গ্রহন করেন । ডিউটি অফিসার লাইসেন্স ও চালানের মূল কপি রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করেন এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর এর নিকট ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার হতে চালান ও লাইসেন্স এর মূল কপি প্রেরন করা হয়। সংশ্লিষ্ট এলাকার ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা ও আনুষঙ্গিক শর্তাবলী বিদ্যমান আছে কিনা তা নিশ্চিত হবেন।
যদি পরিদর্শন করে ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক লাইসেন্সের শর্তাবলী সন্তোষজনক ভাবে বিদ্যমান তবে লাইসেন্সটি নবায়ন করেন। যদি সংশ্লিষ্ট এলাকার ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর প্রতিষ্ঠানটি সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক লাইসেন্সের শর্তাবলী সন্তোষজনক ভাবে বিদ্যমান না থাকে এবং লাইসেন্সটি নবায়ন অযোগ্য বলে মনে করেন। তবে নবায়ন অযোগ্যের কারণ উল্লেখ পূর্বক তিনি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বরাবর সঠিক ভাবে বাস্তবায়নের জন্য ১৫ দিন সময় প্রদান করে লাইসেন্সটি নবায়ন করার জন্য পত্র জারি করবেন। যদি ওয়ার হাউজ ইন্সপেক্টর প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন শেষে রিএসেসমেন্ট এর প্রয়োজন মনে করেন তবে তিনি তা করে লাইসেন্স ফি পুননির্ধারণ করে সেমতে ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক লাইসেন্স নবায়ন করেন।
যে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য অগ্নিপ্রতিরোধক ব্যবস্থা থাকা এবং ফায়ার লাইসেন্স গ্রহন করা অত্যাবশ্যকীয় শর্ত। আমরা অনেকেই জানি না কিভাবে ফ্যাক্টরি বা ভবনের জন্য ফায়ার লাইসেন্স করতে হয়। ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স দপ্তর থেকে ফায়ার লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে
১. আপনার ভবনের লে-আউট প্ল্যান
২. মালিকানার দলিল/বাড়ি ভাড়ার চুক্তিনামা
৩. মিউনিসিপালিটি/সিটি কর্পোরেশন/ইউনিয়ন পরিষদের মূল্যায়ন সার্টিফিকেট
৪. ট্রেড লাইসেন্স (লিমিটেড কোম্পানি হলে সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন এবং মেমোরেন্ডাম ও আর্টিকেল অব এসোসিয়েশনের কপি)
৫. প্লাষ্টিক/ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে কমিশনার/স্থানীয় চেয়ারম্যানের অনাপত্তিপত্র
৬. প্লাষ্টিক/ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে প্রতিবেশীর অনাপত্তিপত্র।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ইন্সপেক্টর ইন্সপেকশনের পর ডিমান্ড নোট ইস্যু করবেন। এই ডিমান্ড নোটের বিভিন্ন শর্ত পূরণ করে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিতে হবে। পুনরায় ইন্সপেকশন শেষে সমস্ত শর্ত পূরণ হলে ফায়ার লাইসেন্স পাওয়া যাবে।
পরিবেশ ছাড়পত্র:
বাংলাদেশে যে কোন স্থানে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে। এর জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। ইন্সপেক্টর কর্তৃক ইন্সপেকশনের পর পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়া যায়।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১. নির্ধারিত ফরমে আবেদনপত্র
২. ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি রিপোর্ট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
৩. বর্জ্য নির্গমন ও পরিশোধন ব্যবস্থার নকশা
৪. লে-আউট প্ল্যান (বর্জ্য পরিশোধনাগারের অবস্থান নির্দেশিত দাগ, খতিয়ান উল্লেখপূর্বক মৌজাম্যাপ)
৫. উৎপাদন প্রক্রিয়ার ফ্লো-ডায়াগ্রাম
৬. আইইই (Initial Environmental Examination) রিপোর্ট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
৭. ইআইএ ( Environment Impact Assessment) রিপোর্ট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
৮. ইএমপি ( Environmental Management Plan) রিপোর্ট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
৯. রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ/চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ/খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ/ রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ/ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
১০. ট্রেজারি চালানের কপি
সিএনজি লাইসেন্স:
সংকুচিত প্রাকৃতিক গ্যাস (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস সংক্ষেপ সিএনজি) জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের একটি রূপ। গ্যাসকে চাপের মাধ্যমে তরলে পরিণত করে তা গ্যাস-ট্যাংকে জমা করা হয়। প্রায় সবধরনের ডিজেল বা পেট্রলচালিত গাড়ি সিএনজি-তে রূপান্তরের মাধ্যমে সিএনজি-কে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তবে নিম্নে ১২৫ সিসি’র মোটর সাইকেলকে গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়াস্বাপেক্ষে এই রূপান্তর সম্ভব। এটি সিসা ও বেনজিন মুক্ত। রক্ষনাবেক্ষন খরচ কম। গ্যাস সহজলভ্য ও সস্তা। সিএনজি বিক্রি হয় কিউবিক মিটার হিসেবে ১ সিএম সিএনজি’র। সিএনজি স্টেশন এর জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামুলক।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১. কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত নির্ধারিত ফর্মে আবেদন (যথাযথভাবে পূরণ এবং স্বাক্ষরিত আবেদনকারী)
২. পে অর্ডার/অ্যাপ্লিকেশন ফি এর ডিমান্ড ড্রাফ্ট
৩. i. মেমোরেন্ডাম এবং আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন (সত্যায়িত কপি, লিমিটেড কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য)
ii. অন্তর্ভুক্তির শংসাপত্র (সত্যায়িত অনুলিপি, সীমিত কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য)
iii. কর্পোরেট অনুমোদন (প্রত্যয়িত অনুলিপি, যদি প্রযোজ্য হয়)
৪. (১) জেলা প্রশাসন থেকে NOC (সত্যায়িত কপি)
(২) সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে এনওসি এবং রাস্তা এবং এর সাথে ইজারা চুক্তি/চুক্তি হাইওয়ে ডিভিশন (প্রত্যয়িত কপি, প্রযোজ্য হলে)
(৩) পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে বর্তমান এনওসি (সত্যায়িত অনুলিপি)
(৪) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ থেকে NOC (সত্যায়িত কপি)
(৫) বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে বর্তমান ‘ছা ফর্ম’/এনওসি (সহ সত্যায়িত অনুলিপি অনুমোদিত চিত্র)
(৬) আরপিজিসিএল থেকে অনুমতি পত্র (সত্যায়িত অনুলিপি)
(৭) পেট্রোল ফিলিং এর ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হলে উভয় পক্ষের মধ্যে সম্পাদিত দলিল পাম্প/স্টেশন (প্রত্যয়িত কপি, প্রযোজ্য হলে)
৫. প্রাকৃতিক দুর্যোগ/দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য জরুরী নিরাপত্তা পরিকল্পনা
৬. i. সিএনজি স্টেশনের লে-আউট প্ল্যান
আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সত্যায়িত কপি, ২ কপি)
আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র/ পাসপোর্ট (সত্যায়িত অনুলিপি)
৭. i. (১) গ্যাস বিতরণ কোম্পানি কর্তৃক জারি করা ডিমান্ড নোট (সত্যায়িত কপি)
(২) গ্যাস বিতরণ কোম্পানির সাথে গ্যাস ক্রয় চুক্তি (সত্যায়িত অনুলিপি)
(৩) গ্যাস কমিশনিং রিপোর্ট/মিটার কার্ড (প্রত্যয়িত অনুলিপি, যদি প্রযোজ্য হয়) ***
ii. অংশীদারি দলিল (প্রত্যয়িত অনুলিপি, যদি প্রযোজ্য হয়)
iii. বর্তমান আয়কর শংসাপত্র (সত্যায়িত অনুলিপি)
iv. বর্তমান ট্রেড লাইসেন্স (সত্যায়িত কপি)
v. ভ্যাট নিবন্ধন শংসাপত্র (সত্যায়িত অনুলিপি)
vi. সর্বশেষ ৩ মাসের পরিশোধিত গ্যাস বিল (সত্যায়িত অনুলিপি)
সিপিপি (ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্ট) লাইসেন্স:
সারা দেশে এখন তিন হাজার মেগাওয়াটের বেশি ক্যাপটিভ বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। শিল্প মালিকরা নিজেদের কারখানার বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে নিজস্ব উদ্যোগে কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণের জন্য ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টগুলোর লাইসেন্স নিতে হবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (BERC) থেকে।
ফায়ার লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, সিএনজি (CNG) লাইসেন্স এবং সিপিপি (CPP) লাইসেন্স নিয়ে যারা চিন্তাগ্রস্থ এবং সঠিক নিয়মাবলী সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তাদের সহযোগিতার জন্য আইনিসেবা টিম সর্বদা প্রস্তুত। তাই এসব লাইসেন্স গ্রহণের জন্য ও নিবন্ধনের কাজে আপনাকে আইনিভাবে সহায়তা করতে সর্বদা আপনার নাগালের মধ্যেই আছে আমাদের টিম। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন আইনি সেবার হটলাইন নম্বরে।