ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স :
কোন ব্যবসায়ী বা শিল্পোদ্যোগতা বিদেশ থেকে দেশে কোনও কাঁচামাল বা পন্য আমদানি করতে চাইলে, আবার বাংলাদেশে উৎপাদিত কোন পন্য বিদেশের বাজারে রপ্তানী করতে চাইলে তার আমদানি-রপ্তানি লাইসেন্স লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক।
এই লাইসেন্স প্রদান এবং নবায়ন এবং এ সংক্রান্ত রেগুলেটরি অথরিটি হল: Office of the Chief Controller of Imports & Exports (CCI&E).
যে কোন প্রকার ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি লাইসেন্স এবং আইআরসি লাইসেন্স তৈরীতে আমরা দিচ্ছি স্বল্প সময়ের সঠিক সমাধান। আপনার লাইসেন্স সঠিকভাবে তৈরীর জন্য আজই যোগাযোগ করুন আইনিসেবায়।
ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স আবেদনের জন্য কী কী ডকুমেন্টস দরকার হয়:
ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স দুটি ভিন্ন হলেও দুটিতে একই কাগজপত্র লাগে। একটি দিয়ে অন্যটির কাজ করা যায় না। অর্থাৎ ইআরসি বা আমদানি লাইসেন্স করে রপ্তানি করা যায় না আবার আইআরসি বা রপ্তানি লাইসেন্স করে আমদানি করা যায় না।
ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স
ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স
ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স করতে যে সকল কাজগপত্রের প্রয়োজন তা নিম্নরুপ:
১) মলিকের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি (ব্যাক্তি মালিকের ক্ষেত্রে) এবং ছবি (সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজে রঙ্গিন ছবি)
২) ট্রেড লাইসেন্স:
যে কোন ব্যবসার জন্য ট্রেড লাইসেন্স হচ্ছে ব্যবসার অনুমতিপত্র।
৩) ব্যাংকের প্রত্যায়ন পত্র অর্থাৎ ট্রেড লাইসেন্স ঠিকানায় ব্যাংক সলভেন্সি:
ট্রেড লাইসেন্স করার পর ব্যবসার নামে একটি ব্যংক একাউন্ট খুলে নিন। এখানে লক্ষণীয় যে, আপনার প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন। কোন মতেই ভিন্ন নাম দিবেন না।
কিছুদিন লেনদেন করার পর ব্যাংককে বলুন আপনার ব্যবসার নামে প্রত্যায়ন পত্র দিতে। অর্থাৎ ব্যাংককে বলবেন আপনাকে একটি ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট দিতে।
৪) ই-টিন (টিন সার্টিফিকেট):
বর্তমানে অনলাইনে সহজেই ই-টিন বা টিন সার্টিফিকেট করা যায়। এরজন্য কোন ফি প্রয়োজন হয় না। অর্থাৎ আপনি নিজেই অনলাইনে বিনামূল্যে TIN সার্টিফিকেট করতে পারেন।
৫) চেম্বার অথবা স্বীকৃত ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনের বৈধ সদত্যতা সনদপত্র:
মম্বারশীপ সার্টিফিকেট অর্থাৎ আমদানি বা রপ্তানি ব্যবসা করার ক্ষেত্রে আপনাকে যে কোন একটি ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্য হতে হবে এবং সংঘ থেকে সনদ গ্রহণ করতে হবে।
৬) ভ্যাট সার্টিফিকেট:
বর্তমান প্রতিটি উৎপাদন কিংবা সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে ভ্যাট প্রদান করতে হয়। আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোন উৎপাদনশীল কিংবা সার্ভিস প্রদান করিলে ভ্যাট সার্টিফিকেট অবশ্যই প্রয়োজন হবে।
এখন অবশ্য অনলাইনে ভ্যাট রেজিট্রেশন করতে পারেন। নিজে নিজে করতে না পারলে এক্সপার্ট কারো সাহায্য নিয়ে সহজেই অনলাইনে ভ্যাট সার্টিফিকেট করতে পারেন।
৭) লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন হবে:
লিমিটেড কোম্পানীর আমদানি রপ্তানি লাইসেন্স করতে হলে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্র লাগবে।
আরো প্রয়োজন হবে, কোম্পানীর রেজিস্ট্রি, জয়েন্ট স্টক কোম্পানী কর্তৃক অনুমদিত সংঘ স্মারক বা মেমোরেন্ডাম আর্টিকেল, সংঘবিধি, ইনকর্পোরেশন সার্টিফিকেট এবং ফরম-১২ ইত্যাদি।
এছাড়াও আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর হতে যে সকল সেবার জন্য (শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য লাইসেন্স, বাণিজ্য রপ্তানি আমদানি লাইসেন্স অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য আইআরসি/ইআরসি লাইসেন্স করতে) যা যা ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় তার বিস্তারিত চেক লিস্ট নিচে দেওয়া হলো।
অনলাইন লাইসেন্সিং মডিউল বা OLM
১ জুলাই ২০১৯ সালে বাংলাদেশ আমদানি রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তর সারা দেশে অনলাই সেবা চালু করে। একেই Online Licensing Module বা OLM বলে। এই সেবা (ওএলএম) চালু হবার পর ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আর নিবন্ধন করা যায় না। তাই দেশের যে কোন প্রান্তে বসে আপনি এখন অনলাইন আমদানি রপ্তানি লাইসেন্স করতে পারেন।
অনলাইনে আমদানি রপ্তানি লাইসেন্স
অনলাইনে আইআরসি বা ইআরসি নিবন্ধন করার জন্য সর্বপ্রথম অনলাইন লাইসেন্সিং মডিউলে একাউন্ট খুলে নিতে হবে। ওএলএম এ একাউন্ট খুললে একটি স্থায়ী একাউন্ট পাবেন। এখানে লগইন করে এর ড্যাসবোর্ড থেকে IRC ও ERC অপশন ক্লিক করে ফরম পূরণ করবেন।
এরপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করে সাবমিট করবেন। আপনার আবেদনটি কোন পর্যায়ে রয়েছে তা অনলানে ট্রাক করে দেখতে পারেন আপনার ড্যাশবোর্ড থেকেই।
ওএলএম একাউন্ট খোলার জন্য কী কী প্রয়োজন?
আপনার নিজের নামে কিংবা আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি ওএলএম একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজন হবে একটি সক্রিয় ইমেইল আইডি (জিমেইল, ইয়াগু মেই, হটমেইল) এবং মোবাইল নাম্বার। ইমেইল ও মোবাইল নাম্বার অবশ্যই সচল থাকতে হবে। নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে এই ইমেইল ও মোবাইল নাম্বারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাসহ আপনার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হবে।
এছাড়াও এই একাউন্ট ব্যবহার করে সনদ রিনিউ, তথ্য পরিবর্তন/সংশোধন, ব্যাংক পরিবর্তন, স্লাব পরিবর্তন কিংবা অন্য কোন সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। তাই ওএলএম এর ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড নিজ তত্বাবধানে যত্ন করে রাখুন।
ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স
ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স
ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স – অনলাইন সেবা ও ওএলএম এর সুবিধা
১. ঘরে বসে কিংবা বিশ্বের যে কোন প্রান্তে বসে আমদানি রপ্তানি তথা ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স করা যাবে।
২. আবেদন দাখিল কিংবা সনদ পাওয়ার জন্য অফিসে যাওয়া প্রয়োজন হবে না।
৩. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের হার্ডকপি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
৪. আবেদন বর্তমানে কোন পর্যায়ে আছে তা অনলাইনে ট্রাক করা যায়।
৫. দালাল বা মধ্যবর্তী লোকের কোন প্রয়োজন নেই।
৬. সেবা গ্রহণকারীর সকল তথ্য কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হয়।
৭. অর্থ, সময় ও শ্রম সাশ্রয়ী হয়।
প্রথমবারের মতো নিবন্ধন
আপনি প্রথমবারের মতো আমদানিকারক, রপ্তানিকারক কিংবা ইন্ডেন্টিং সার্ভিসেস হিসাবে নিবন্ধন করতে চাইলে প্রথমেই https://olm.ccie.gov.bd/ এই সাইটে ভিজিট করে একটি OLM নতুন একাউন্ট খুলুন। ড্যাশবোর্ড থেকে ”আইআরসি” বা “ইআরসি” অপশন ক্লিক করে নির্ধারিত ফরম পূরণ করুন। এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করে সাবমিট করুন।
আমদানি/রপ্তানি লাইসেন্স নবায়ন
ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স নবায়ন করার ক্ষেত্রে ওএলএম একাউন্ট লগইন করুন। এবার ড্যাশবোর্ড থেকে “রিনিউ” অপশন ক্লিক করে নির্ধারিত ফরম পূরণ করুন। এরপর প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট স্ক্যান করে আপলোড করে সাবমিট করুন। যদি ইতিপূর্বে IRC & ERC করে অনলাইনে যুক্ত না হলে কি করবেন? আপনি যদি ইতিপূর্বে ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স করে থাকেন এবং অনলাইনে যুক্ত না হয়ে থাকেন, তাহলে উপরের নিয়মে একটি ওএলএম একাউন্ট খুলুন।
এবার লগইন করে ড্যাশবোর্ড থেকে “রি-রেজিস্ট্রেশন” অপশনে গিয়ে ফরম পূরণ করুন। এরপর প্রয়োজনী কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করে সাবমিট করুন। এবার অনলাইনের আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করে নিন। প্রিন্টেড কপিসহ অরিজিনাল সনদ ও নবায়ন বইটি সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক অফিসে জমা দিন।
যে কোন প্রকার ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি ও আইআরসি লাইসেন্স তৈরীতে আমরা দিচ্ছি স্বল্প সময়ের সঠিক সমাধান। আপনার লাইসেন্স সঠিকভাবে তৈরীর জন্য আজই যোগাযোগ করুন আইনিসেবায়।